দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে দেড় একর জমির ওপর নির্মিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) এর শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সকালে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ‘খানসামা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)’সহ ২৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বেলা ১১টা ২৭ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নবনির্মিত এসব কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেরগুলোর উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

পরে ভার্চুয়ালী উদ্বোধন শেষে খানসামা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) পরির্দশন করেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি।

এ সময় খানসামা উপজেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সফিউল আযম চৌধুরী লায়ন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশিদা আক্তার, এসিল্যান্ড মারুফ হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি মোস্তফা আহমেদ শাহ,

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা পারভীন, থানা অফিসার ইনচার্জ চিত্ত রঞ্জন রায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম, খানসামা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সিকান্দার আলী কাবুল,উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রত্যন্ত অঞ্চল হিসেবে খানসামা উপজেলায় দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত ২০১৬ সালে খানসামা কারগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি।

টিটিসি সূত্র জানায়, কেন্দ্রে বর্তমানে কম্পিউটার, ইলেকট্রিক্যাল, আর্কিটেকচার, মেশিন টুলস অপারেশন, ইংরেজি ভাষা শিক্ষাসহ ছয়টি কোর্স চালু রয়েছে। ছয় মাস মেয়াদি কোর্সে ২জন প্রশিক্ষণার্থী রয়েছে ছয়টি কোর্সে। টিটিসিতে বছরে ১০০০ জন শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবে।

টিটিসির কার্যক্রম শুরু হলে গোটা খানসামার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড একটা নতুন চেহারা পাবে বলে আশাবাদী খানসামা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সিকান্দার আলী কাবুল। তিনি বলেন, ‘এই টিটিসি খানসামাসহ আশপাশের উপজেলার তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।’

টিটিসির অধ্যক্ষ ওয়ালিউর রহমান জানান, প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে রুপান্তরিত হয়ে দেশ বিদেশে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হতে পারবে প্রশিক্ষণার্থীরা। মূলত মানব সম্পন্ন উন্নয়নে টিটিসি নীলফামারী জেলায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে জানান অধ্যক্ষ।

তিনি আরো বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার জন্য অনেক ধরনের ট্রেনিং রয়েছে। টিটিসিতে যেকোনো একটি বিষয়ের ওপর কোর্স করলে বিদেশে গিয়ে কাজ করতে সুবিধা হবে। এছাড়া সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গেলে প্রতারিত হওয়ার সুযোগও কম থাকে।’

টিটিসির তিনটি ভবনের একটি একাডেমিক, একটি ডরমিটরি, একটি প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের কোয়ার্টার ও ছাত্রী হোস্টেল। একাডেমিক ভবনটিতে ক্লাস হবে। ডরমিটরিতে থাকবেন ছাত্ররা। প্রিন্সিপালদের আবাসিক কোয়ার্টারের ওপরে ছাত্রীদের আবাসন ব্যবস্থা থাকবে।